পর্ব-০২
বলছিলাম জামে মসজিদের কথা। মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর
যখন স্থাপন করা হয় সেই সময় হতে এই মসজিদেই সালাত আদায় করতাম। সেই সময় মসজিদের প্রারম্ভিক
অবস্থায় একদিন বৃষ্টির দিনে বিদ্যুতাড়িত হয়ে ইন্তেকাল করেন মাওঃ আব্বাস (রহ)। ইনি ছিলেন
সেই সময়ের এবং বর্তমান খতিব সাহেবের ছোট ভাই।
মসজিদটির পিছনে হযরতের পুরো পরিবারের
সরাসরি সংশ্লিষ্টতা ছিল। বিশেষ করে মাওঃ আব্বাস (রহ), মাও: নুরুল আনছার সাহেব (দা:বা),
মাও: আবু বক্কর ইত্যদির নাম না বললেই নয়। নাম ধরে ধরে সবার কথা মনে না পড়লেও অনেকের
কথাই মনে পড়ে। মরহুম জনাব আবু তাহের (রহ) প্রকাশ পটিয়ার বা পইট্টার কাকা যার ঋণ কোন
দিন শোধ করা সম্ভব নয়। মাও: নুর মোহাম্মদ (রহ), জনাব ছিদ্দিক সাহেব (বন্দরের একজন কর্মচারী
বুজুর্গ ব্যক্তি), মাওঃ ইসমাইল বুখারাী, মাও: আবদুর রহিম, মাও: ইসমাইল (রেলওয়ে একাডেমির
ইমাম সাহেব), মাও: মুসা (তখন সে ছাত্র), মাও: ছানাউল্লাহ নূরী (সাবেক খতিব, এসি মসজিদ,
হালিশহর), হাফেজ ওসমান, বক্কর ভাই, নুরুল আলম ছিন্টু, ফরহাদ হোসেন পিন্টু, শাহাদাত
(৪নং রোড), শাহিন, শাহাদাত, মনোয়ার, খোরশেদ সাহেব, আবদুর রশিদ এবং আমি গুণাহগার ছিলাম
এই মসজিদের সাথে সরাসরি শারিরীক ও মানসিক শ্রম দেয়ায় সবার আগে।
যাদের নাম উল্লেখ করা
হলো এনারা সবাই এই মসজিদের প্রাণ ছিলেন। একজনের কথা না বললে তার প্রতি অবিচার করা হবে।
তিনি হচ্ছেন মরহুম মিন্টু কাকা (লাতু, আলী ও রনির দুলাভাই)। প্রত্যেক মাসে নতুন মার্কেটের
বিদ্যুৎ বিল নেয়ার সময় মসজিদের জন্যও তিনি অর্থ উত্তোলন করতেন। তার এই একই কাজ নিয়মমাফিক
করে যেতেন মরহুম ছিদ্দিক কাকা ও মরহুম কবির মিয়া যাকে প্রায় মানুষ কবির বুইজ্জা বলে
ডাকতেন। প্রত্যেক ওয়াক্তেই জামাতের সাথে একত্রিত হয়ে সালাত আদায় করা হতো। জনাব ছিদ্দিক
সাহেব ছিলেন বুজুর্গ ব্যক্তি। নামাযে খুব ধীর
গতি ছিল এবং দীর্ঘ সময় ধরে তিনি সালাত আদায় করতেন। সেই সময় বড্ডা হুজুর বা বড় হুজুর
নামের ফেনীর একজন আলেম ছিলেন যিনি মেইন রোডের পাশে মাইক লাগিয়ে “দান কারীদের মাতা-পিতা সুখে রাখবেন আল্লাহ কবরে,
নুরের টুপী মাথায় দিয়া উঠাইবেন কাল হাশরে” এই গজল গেয়ে টাকা উঠাতেন। আমি আর হাফেজ
উসমান বিশ্বরোডের যাত্রীবাহি বাসগুলোতে উঠে মসজিদের জন্য টাকা তুলতাম। সেই ভোরে আমরা
জেগে উঠতাম এবং একে অপরকে ডেকে নামাযে নিয়ে আসতাম এবং এই মসজিদ থেকে অনেক দূরে আমাদের
বাসা হওয়া স্বত্বেও এখানেই চলে আসতাম। আমি এখানে অনেকবার আযান দিয়েছি এবং নামাযও পড়িয়েছি
দু’এক বার। পটিয়ার কাকুর ছিল একামত দেয়ার প্রতি খুব ঝোঁক। তিনি ছাড়া আর কেউ একামত দিতে
পারতেন না। কারণ তিনি সব সময় নামাযের অনেক আগে মসজিদে আসতেন, মসজিদ পরিস্কার করতেন,
আযান দিতেন এবং একামত দিতেন।
(চলবে)